ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ , ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ট্রাম্পকে যেকোনো সময় হত্যা: ইরানি কর্মকর্তা

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ০৯-০৭-২০২৫ ০৮:৫১:৪১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৯-০৭-২০২৫ ০৮:৫১:৪১ অপরাহ্ন
​ট্রাম্পকে যেকোনো সময় হত্যা: ইরানি কর্মকর্তা ​ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর বিলাসবহুল ফ্লোরিডার বাড়ি ‘মার-আ-লাগো’তে আর নিরাপদে রোদ স্নান করতে পারবেন না। কারণ যেকোনো সময় তাঁকে হত্যা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ট্রাম্প যখন সেখানে সূর্যস্নান করবেন, ঠিক তখনই একটি ছোট ড্রোন তার ওপর আঘাত করতে পারে।

ইরানি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিনিয়র উপদেষ্টা জাভেদ লারিজানি এই মন্তব্য করেন। তিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের একজনের ভাই।

বুধবার (৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে লন্ডন-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল।

জাভেদ লারিজানি বলেন, ‘ট্রাম্প এমন কিছু করেছেন, যার জন্য এখন আর মার-আ-লাগোতে নিশ্চিন্তে শুয়ে রোদ পোহাতে পারবেন না। যখন তিনি সেখানে সূর্যের দিকে পেট রেখে শুয়ে থাকবেন, তখন একটি ছোট ড্রোন তার নাভিতে আঘাত করতে পারে। এটা খুবই সহজ।’

‘যারা সর্বোচ্চ নেতা খামেনিকে অপমান করে ও হুমকি দেয় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ’ নামে তহবিল সংগ্রহকারী একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ব্লাড প্যাক্ট’ চালুর পরেই এই মন্তব্যগুলো এলো। জানা গেছে, প্ল্যাটফর্মটি এখন পর্যন্ত ৪০ মিলিয়ন বা চার কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে। এই অর্থই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মাথার মূল্য হিসেবে ধরা হচ্ছে।

ট্রাম্পের মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা
‘ব্লাড প্যাক্ট’ নামের অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি তাদের হোমপেজে বলেছে, ‘আমরা শপথ করছি, যারা আল্লাহর শত্রু এবং সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ, তাদের বিচারের আওতায় আনতে যারা ভূমিকা রাখবে, তাদের সবাইকে পুরস্কৃত করা হবে।’

এই প্রচারণার মূল লক্ষ্য হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার জন্য ১০ কোটি (১০০ মিলিয়ন) ডলার সংগ্রহ করা। তবে এই প্ল্যাটফর্মটি কে বা কারা চালাচ্ছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ইরানের বিপ্লবী গার্ডের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা ফার্স এই উদ্যোগের খবর প্রকাশ করেছে। তারা ইরান ও বিদেশের ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাস ও শহরের কেন্দ্রীয় স্কয়ারে জড়ো হয়ে খামেনির প্রতি সমর্থন জানাতে।

ফার্স নিউজ এজেন্সি ট্রাম্প ও ‘ইসরায়েলে’র প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইসলামিক শাস্তি ‘মোহারেবেহ’ প্রয়োগের দাবি জানিয়েছে। ইরানি আইন অনুযায়ী, ‘মোহারেবেহ’ মানে ‘আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’, যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এই প্রচারণা থেকে নিজ সরকারকে দূরে রাখার চেষ্টা করছেন। সোমবার (৭ জুলাই) এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন ভাষ্যকার টাকার কার্লসনকে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের ফতোয়া এবং এই ধরনের অভিযানের সঙ্গে ইরানি সরকার বা সর্বোচ্চ নেতার কোনো সম্পর্ক নেই।’

তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির ঘনিষ্ঠ একজন প্রতিনিধির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কায়হান পত্রিকা প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) প্রকাশিত একটি সম্পাদকীয়তে কায়হান লিখেছে, ‘এটি কোনো একাডেমিক মতামত নয়, বরং বিশ্বাস, পবিত্রতা এবং বিশেষ করে ইসলামি শাসনের মূল ভিত্তি আইনজ্ঞের অভিভাবকত্ব রক্ষার একটি স্পষ্ট ধর্মীয় রায়।’

পত্রিকাটি আরও সতর্ক করে বলেছে, “যেকেউ ভবিষ্যতে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করবে, তাকে কঠিন প্রতিশোধের মুখোমুখি হতে হবে। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র একদিন ‘ইসরায়েল’কে রক্তে ডুবিয়ে দেবে।”

তবে ইরানের সাবেক আইনপ্রণেতা গোলামালি জাফরজাদেহ ইমেনাবাদী এর আগে কায়হানের এই অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না কায়হানের প্রধান সম্পাদক হোসেইন শরিয়তমাদারি ইরানি হয়েও বলছেন, ট্রাম্পকে হত্যা করলে জনগণের খরচ কমে যাবে।’

এর জবাবে কায়হান লেখে, ‘আজ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ প্রায় জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। ইমেনাবাদীর মন্তব্য ইরানি মূল্যবোধের পরিপন্থী।’

২০২০ সালে ইরাকের বাগদাদে ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই হত্যার পর থেকেই ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে ইরানের পক্ষ থেকে একাধিকবার হত্যার হুমকি এসেছে।

গত বছর মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জানিয়েছিল, ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) সোলেইমানি হত্যার বদলা নিতে ট্রাম্পকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এইচএইচ/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ